Breaking News

রাশিয়ার বিরুদ্ধে তৎপর জি -৭ , ভারসাম্যে দিল্লি

রাশিয়ার বিরুদ্ধে তৎপর জি -৭ , ভারসাম্যে দিল্লি


নয়াদিল্লি , ৫ জুলাই : মিউনিখে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কার্যত একঘরে করার প্রশ্নে সহমত হল বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর এবং ধনী সাত রাষ্ট্রের সংগঠন জি -৭ । ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াল তারা । সম্মেলনে ভিডিয়ো মাধ্যমে যুক্ত হলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি । সম্মেলনের বার্তা , যুদ্ধ চলবে আরও দীর্ঘদিন । রাশিয়ার বিরুদ্ধে তাই এ বার কোমর বেঁধে নামার সময় এসেছে । 


কূটনৈতিক শিবিরের মতে , এই পরিস্থিতিতে নিজেদের রাশিয়া নীতি নিয়ে ফের এক বার ভাবার সময় এসেছে ভারতের । এখনও পর্যন্ত ভারসাম্যের নীতি নিয়ে চলে , আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নয়াদিল্লি সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছে এটা ঠিকই । রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জে কোনও নিন্দামূলক প্রস্তাব না নিয়ে এবং তার পরিণামে মস্কোর কাছ থেকে অনেক কম দামে গত বছরের তুলনায় পাঁচগুণ অশোধিত তেল আমদানি করেছে ভারত । জ্বালানির এই প্রবল চাহিদার বাজারে এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে সরকারকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে । কূটনৈতিক সূত্রের মতে , সব চেয়ে বড় কথা পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞাকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে এই আমদানির জন্য কোনও চড়া দাম এখনও দিতে হয়নি ভারতকে । এখনও পর্যন্ত , প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সহযোগিতার কেন্দ্রে ভারতকেই রেখে এগোচ্ছে আমেরিকা । ভারতের রাশিয়া থেকে আমদানি ( তা সে এস ৪০০ ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরোধী সরঞ্জামই হোক বা অশোধিত তেল ) প্রসঙ্গে


এক রকম চোখ বন্ধই করে রেখেছে বাইডেন প্রশাসন । চিনকে প্রশমিত করতে ওয়াশিংটনের ভারতকে এখন প্রয়োজন । গত মাসে টোকিওতে বাইডেন বলেওছিলেন , ‘ ভারত এবং আমেরিকার সহযোগিতাকে বিশ্বের সব চেয়ে ঘনিষ্ঠ করার প্রশ্নে দু'দেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ । ' ভারত যে এই ভারসাম্যের নীতি নিয়ে চলে , পশ্চিম বিশ্ব এবং রাশিয়া উভয় পক্ষের কাছেই এখনও পর্যন্ত নিজের চাহিদা ধরে রেখেছে , তা সদ্যসমাপ্ত জি -৭ বৈঠক থেকেও স্পষ্ট । কানাডা থেকে আমেরিকা— বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের আগ্রহ দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে মোদীকে ঘিরে । ভারতের প্রতি সদর্থক বার্তা দিয়ে বাইডেন নিজে কয়েক কদম হেঁটে চলে এসেছেন মোদীর কাছে ।


 সামনের বিশেষজ্ঞদের রাস্তা দীর্ঘ । মতে , যুদ্ধ যত এগোবে , রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক , প্রযুক্তি এবং পরিষেবাগত চাপ তত বাড়বে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলির । আর তখন মস্কোর আরও বেশি করে চিনের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকা ভিন্ন গতি নেই । রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক রাখার কিছু কারণের মধ্যে এটাও গুরুত্বপূর্ণ যে , চিনের সঙ্গে সংঘাতমূলক পরিস্থিতিতে মস্কোকে দর কষাকষির জন্য কাজে লাগানো । কিন্তু চিন - নির্ভরতা রাশিয়ার যত বাড়বে , ভারতের সেই সুযোগ কমবে । চিনকে চাপে রাখতে মস্কোকে পাশে পাওয়া দুরস্থান , তখন দায়ে পড়ে মস্কোই যে কৌশলগত প্রশ্নে ভারতের দিক থেকে মুখ সরিয়ে নিতে বাধ্য হতে পারে— এমন আশঙ্কা বাড়ছে । আর তাই ‘ ভারসাম্যের নীতি ' নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ