Breaking News

চিন্তা বাড়িয়ে টাকার দাম, ডলার পেরোল ৭৯ টাকা

চিন্তা বাড়িয়ে টাকার দাম, ডলার পেরোল ৭৯ টাকা

মুম্বই, ৩ অগস্ট: এক দিনেই আতঙ্কে পরিণত হল টাকার দাম ঘিরে উচ্ছ্বাস। মঙ্গলবার যেখানে ডলারের দাম ৫৩ পয়সা পড়েছিল, সেখানে বুধবার তা বাড়ল ৬২ পয়সা। দিনের শেষে প্রতি ডলার দাঁড়াল ৭৯.১৫ টাকা। বাজার মহলের মতে, মূলত চিন-আমেরিকার মতো দেশের ভূ-রাজনৈতিক টানাপড়েন, দেশে- বিদেশে সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা, ভারতের অর্থনীতি সম্পর্কে বেশ কিছু খারাপ খবরই টেনে নামিয়েছে টাকার দরকে। যার মধ্যে রয়েছে পরিষেবা ক্ষেত্রে গত মাসে তুলনায় খারাপ ফলের ইঙ্গিত এবং রফতানি কমা ও বাণিজ্য ঘাটতি রেকর্ড অঙ্কে পৌঁছনো। তবে আজ ফের কিছুটা বেড়েছে শেয়ার বাজার। এ নিয়ে টানা ছ'দিন বাড়ল সূচক। এই উত্থানে লগ্নিকারীরা ফিরে পেলেন ১৩ লক্ষ কোটি টাকার বেশি।


পরিসংখ্যান বলছে, গত মাসে পরিষেবা ক্ষেত্রের সূচক এসঅ্যান্ড গ্লোবাল ইন্ডিয়া সার্ভিসেস পিএমআই বিজনেস অ্যাক্টিভিটি ইন্ডেক্স জুনের ৫৯.২ থেকে কমে হয়েছে ৫৫.৫। চার মাসে যা সব চেয়ে কম। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, চড়া মূল্যবৃদ্ধি, দেশ জুড়ে বর্ষা আসা, প্রতিযোগিতা বুদ্ধি পাওয়া এবং চাহিদা কমার জেরে এই ক্ষেত্রে উৎপাদন এবং বিক্রি দুই-ই কমেছে। উল্টে বেড়েছে খাদ্য, জ্বালানি, কাঁচামাল, কর্মী, পরিবহণ ইত্যাদি খাতে সংস্থাগুলির ব্যয়। ফলে সে ভাবে কর্মী সংখ্যাও বাড়ায়নি তারা। একই ভাবে উৎপাদন এবং পরিষেবা মিলে তৈরি করা কম্পোজিট পিএমআই বিজনেস অ্যাক্টিভিটি ইন্ডেক্সও ৫৮.২ থেকে নেমেছে ৫৬.২-এ। এই খবরের জের পড়েছে ভারতীয় মুদ্রাটির উপরে।


এর সঙ্গে জুলাইয়ে ১৭ মাসের মধ্যে প্রথম রফতানি কমা এবং অশোধিত তেলের চড়া দামের হাত ধরে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি রেকর্ড ৩১০২ কোটি ডলারে পৌঁছে যাওয়ার খবরের প্রভাবও পড়েছে টাকার দামে। জুনেও এই ঘাটতি ছিল ২৬১৮ কোটি ডলার। আশঙ্কা বাড়ছে আর্থিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির ফলে আমদানি ও রফতানি দুই-ই বাড়লে, আরও চওড়া হবে ঘাটতি। যা চাপে ফেলবে টাকাকে।


পাশাপাশি বাজার মহলের মতে, আমেরিকার কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি-র তাইওয়ান সফর ঘিরে চিনের সঙ্গে আমেরিকার রাজনৈতিক টানাপড়েনের ফলে ডলারকে লগ্নির সুরক্ষিত গন্তব্য হিসেবে বাছছেন লগ্নিকারীরা। ফলে চাহিদা এবং দর বাড়ছে তার। পাশাপাশি, এ সপ্তাহেই ফের ভারতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আমেরিকাতেও ফেডারাল রিজার্ভের সুদ বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছে। এই সবই টেনে নামিয়েছে টাকার দরকে।


তবে এর মধ্যেই বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর ফের ব্যারেলে ১০০ ডলারের নীচে নামা স্বস্তির বলে জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট মহল। যদিও বুধবারই তেল রফতানিকারী দেশগুলির সংগঠন ওপেক এবং তাদের সহযোগীরা জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দিনে অনেকটাই কম তেল উত্তোলন করবে তারা। এই খবরের প্রভাবে তেলের দর বাড়ে কি না এবং তার প্রভাব টাকার উপরে কতটা পড়ে, সে দিকই আপাতত সকলের নজর থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ